প্লাবনভূমি
নদীর নিম্নগতিতে ভূমির ঢাল খুব কম হওয়ায় নদীবাহিত
পলি, বালি, কাদা নদীগর্ভে সঞ্চিত হয়ে নদীগর্ভ ভরাট করে দেয়। বর্ষাকালে নদীতে হঠাৎ
জল বেড়ে গেলে অগভীর নদী উপত্যকা এই অতিরিক্ত জল বহন করতে পারে না এবং নদীর দুই
তীরের নিচু জমি প্লাবিত হয়। এইভাবে বছরের পর বছর ধরে প্লাবিত অঞ্চলে নদীবাহিত পলি,
বালি, কাদা সঞ্চিত হয়ে যে সমভূমি অঞ্চল সৃষ্টি হয় তাকে প্লাবনভূমি বলে।
বৈশিষ্ট্য –
[০১] প্লাবনভূমিগুলি দৈর্ঘ্যে ৪০ থেকে ৬০ কিমি এবং
প্রস্তে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে।
[০২] সমভূমি প্রকৃতির এই ভূমিরূপ পলিগঠিত বলে
প্লাবনভূমির মৃত্তিকা খুব উর্বর হয়।
[০৩] প্লাবনভূমিতে স্বাভাবিক বাঁধ, ঝিল, বিল বা অশ্বক্ষুরাকৃতি
হ্রদ দেখা যায়।
উদাহরণ – ভারতের ভাগীরথী – হুগলী, চিনের হোয়াং হো,
ইয়াং সিকিয়াং নদীতে এরকম অনেক প্লাবন ভূমি দেখা যায়।
স্বাভাবিক বাঁধ
নদীর নিম্নগতিতে ভূমির ঢাল খুব কম হওয়ায় নদীবাহিত
পলি, বালি, কাদা নদীগর্ভে সঞ্চিত হয়ে নদীগর্ভ ভরাট করে দেয়। বর্ষাকালে নদীতে হঠাৎ
জল বেড়ে গেলে অগভীর নদী উপত্যকা এই অতিরিক্ত জল বহন করতে পারে না এবং নদীর দুই
তীরের নিচু জমি প্লাবিত হয়। পরে প্লাবনের জল সরে গেলে পলি, বালি, কাদা নদী
তীরবর্তী অঞ্চলে সঞ্চিত থাকে। বছরের পর বছর ধরে প্লাবনের ফলে এই সঞ্চয়ের পরিমাণ
বৃদ্ধি পায় এবং তটরেখার সমান্তরালে বাঁধের আকারের খানিকটা উঁচু ভূমিরূপ সৃষ্টি
করে। এই ধরণের ভূমিরূপকে স্বাভাবিক বাঁধ বলে।
বৈশিষ্ট্য –
[০১] স্বাভাবিক বাঁধগুলির উচ্চতা প্লাবন ভূমির তল
থেকে প্রায় তিন – চার মিটার উঁচু হয়।
[০২] নদীর তটরেখা বরাবর বিস্তৃত এই বাঁধগুলির ঢাল
নদীর কিনারা থেকে বিপরীতমুখী হয়।
[০৩] স্বাভাবিক বাঁধ খানিকটা হলেও বন্যা প্রতিরোধ
করে।
উদাহরণ – গঙ্গা, নীল প্রভৃতি নদী তীরবর্তী অঞ্চলে
নিম্নপ্রবাহে স্বাভাবিক বাঁধ দেখা যায়।