মাধ্যমিক প্রস্তুতি 2021, Madhyamik Bengali 2021 মাধ্যমিক বাংলা Madhyamik
Bengali আফ্রিকা
প্রশ্নঃ ‘হায় ছায়াবৃতা’ – ‘ছায়াবৃতা’ কে ? তাকে ছায়াবৃতা বলার কারণ
কী ? [প্রশ্নমান ১ = ২ = ৩]
উত্তরঃ
কবি সার্বভৌম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘পত্রপুট’ কাব্যগ্রন্থের
অন্তর্গত ‘আফ্রিকা’ কবিতা থেকে গৃহীত প্রশ্নোদ্ধৃত অংশে আফ্রিকা মহাদেশকে ছায়াবৃতা
বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
অসূর্যম্পশ্যা, বনস্পতি পরিবেষ্টিত আফ্রিকা মহাদেশে দীর্ঘদিন ধরে সূর্যের
আলো বা সভ্যতার আলো প্রবেশ না করায় তাকে ‘ছায়াবৃতা’ বলা হয়েছে। স্পষ্টতই কবি
শব্দটিকে দ্বৈত অর্থে ব্যবহার করেছেন। একদিকে আফ্রিকা ছিল চিরসবুজ বৃক্ষরাজির ‘ছায়া
দ্বারা আবৃত’; অন্যদিকে ব্যঞ্জিত অর্থে সর্বজন উপেক্ষিত এই মহাদেশ ছিল ‘নয়নের
অন্তরালবাসিনী’। তাই নিজের স্বাতন্ত্রতায়, মহিমায় ভাস্কর আফ্রিকাকে কবি ‘হায়’ অব্যয়ের প্রয়োগের
মাধ্যমে ‘ছায়াবৃতা’ বলে তাৎপর্যমন্ডিত করেছে।
প্রশ্নঃ ‘চিরচিহ্ন দিয়ে গেল তোমার অপমানিত ইতিহাসে’ – কাকে একথা
বলা হয়েছে ? কীভাবে তার অপমানিত ইতিহাসের চিরচিহ্ন মুদ্রিত হলো ? [প্রশ্নমান ১ + ৪
= ৫]
উত্তরঃ
কবি সার্বভৌম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘পত্রপুট’ কাব্যগ্রন্থের
অন্তর্গত ‘আফ্রিকা’ কবিতা থেকে গৃহীত প্রশ্নোদ্ধৃত অংশে আফ্রিকা মহাদেশকে উদ্দেশ্য
করে একথা বলা হয়েছে।
অসূর্যম্পশ্যা, বনস্পতি পরিবেষ্টিত আফ্রিকা মহাদেশে দীর্ঘদিন ধরে সূর্যের
আলো বা সভ্যতার আলো থেকে বঞ্চিত ছিল। কিন্তু একদিন তার কোমল কায়ায় থাবা বসায়
মোহমত্ত মানুষরূপী নেকড়ের দল। অপাপবিদ্ধ
আফ্রিকার ভূমি অপবিত্র হয় বহিরাগতদের কলুষ স্পর্শে। সাম্রাজ্যবাদী, ঔপনিবেশিক
শক্তির আক্রমণে কুমারীত্ব ঘুচিয়ে শোষণ, বঞ্চনার আবহে শাসকের স্বেচ্ছাচারের মৃগয়াভূমিতে
পরিণত হয় এই পুণ্যভূমি। ক্ষমতালোভীর অপমান, লাঞ্ছনায় বিদ্ধস্ত এই মহাদেশের পথের
ধুলোয় মিশে যায় সাধারণ, প্রান্তিক মানুষের রক্ত আর চোখের জল। সেই কাদামাখা পথ ধরে
উপেক্ষার দাম্ভিকতায় অবাধে বিচরণ শুরু হয় অত্যাচারী রাষ্ট্রনায়ক ও তাদের বংশবদের। তাদের
হাতকড়িতে বন্দী হয় অসহায় মানুষ। দাস
ব্যবসার মতো চরম পাশবিকতা ধীরে ধীরে গ্রাস করে গোটা মানবজীবনকেই। মৃত্যু ঘটে
মানবিকতার। এই বর্বরতা ও লোভ ছিল নিকষ কালো, যার তুলনায় ‘সূর্যহারা অরণ্য’ যেন অনেকটাই
ম্রিয়মাণ। কালিমালিপ্ত হয় মানব সভ্যতার ইতিহাস, অপমাণিত আফ্রিকার অশ্রুজলে।
আফ্রিকার অবগুন্ঠিত ক্রন্দন বাঙময় হয়ে ওঠে কবির ভাষায় –
“বাষ্পাকুল হল অরণ্যপথ
রক্তে অশ্রুতে মিশে।“
এভাবেই সাম্রাজ্যবাদী দস্যুদের নিদারূন অত্যাচারের চিরচিহ্ন হয়ে
ওঠে আফ্রিকা – আলোচ্য পংক্তিতে কবির এই ধারণাই পরিস্ফূট হয়ে উঠেছে।
প্রশ্নঃ ‘নখ যাদের তীক্ষ্ণ তোমার নেকড়ের চেয়ে’ – যাদের বলতে কাদের
কথা বলা হয়েছে ? তাদের নখ নেকড়ের চেয়ে তীক্ষ্ণ কেন ? [প্রশ্নমান ১ + ২ = ৩]
উত্তরঃ
কবি সার্বভৌম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘পত্রপুট’ কাব্যগ্রন্থের
অন্তর্গত ‘আফ্রিকা’ কবিতা থেকে গৃহীত প্রশ্নোদ্ধৃত অংশে কবি যাদের বলতে
সাম্রাজ্যবাদী ঔপনিবেশিক শাসকদের বোঝানো হয়েছে।
অসূর্যম্পশ্যা, বনস্পতি পরিবেষ্টিত আফ্রিকা মহাদেশে দীর্ঘদিন ধরে সূর্যের
আলো বা সভ্যতার আলো থেকে বঞ্চিত ছিল। কিন্তু একদিন তার কোমল কায়ায় থাবা বসায়
মোহমত্ত মানুষরূপী নেকড়ের দল। অপাপবিদ্ধ
আফ্রিকার ভূমি অপবিত্র হয় বহিরাগতদের কলুষ স্পর্শে। সাম্রাজ্যবাদী, ঔপনিবেশিক
শক্তির আক্রমণে কুমারীত্ব ঘুচিয়ে শোষণ, বঞ্চনার আবহে শাসকের স্বেচ্ছাচারের মৃগয়াভূমিতে
পরিণত হয় এই পুণ্যভূমি। ক্ষমতালোভীর অপমান, লাঞ্ছনায় বিদ্ধস্ত এই মহাদেশের পথের
ধুলোয় মিশে যায় সাধারণ, প্রান্তিক মানুষের রক্ত আর চোখের জল। সেই কাদামাখা পথ ধরে
উপেক্ষার দাম্ভিকতায় অবাধে বিচরণ শুরু হয় অত্যাচারী রাষ্ট্রনায়ক ও তাদের বংশবদের। তাদের
হাতকড়িতে বন্দী হয় অসহায় মানুষ। দাস
ব্যবসার মতো চরম পাশবিকতা ধীরে ধীরে গ্রাস করে গোটা মানবজীবনকেই। মৃত্যু ঘটে
মানবিকতার।
এই অত্যাচার, হিংস্রতার অভিঘাত এতটাই তীব্র ছিল যে, তা ছিল হিংস্র
শ্বাপদের চেয়েও ভয়ংকর। এই হিংস্রতার তীব্রতা বর্ণনা প্রসঙ্গে কবি নেকড়ের সঙ্গে
তুলনার বিষয়টি এনেছেন।