সহায়ক পাঠ কোনি – র [ষষ্ঠ অধ্যায়] দীর্ঘ উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলী – ১



মাধ্যমিক প্রস্তুতি 2021, Madhyamik Bengali 2021  মাধ্যমিক বাংলা Madhyamik Bengali কোনি


প্রশ্নঃ ‘একটা মেয়ে পেয়েছি, তাকে শেখাবার সুযোগটুকু দিও, তাহলেই হবে’ – বক্তার এমন আকুতির কারণ ব্যাখ্যা করো। উদ্ধৃতাংশে বক্তার কোন মনোভাবের প্রকাশ ঘটেছে ?      [প্রশ্নমান ৩ + ২ = ৫]   
উত্তরঃ
       হাল আমলের বাংলা কিশোর সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় লেখক তথা বিশিষ্ট ক্রীড়া সাংবাদিক মোতি নন্দী প্রণীত কিশোর উপন্যাস ‘কোনি’ থেকে প্রশ্নোদ্ধৃতাংশটি গৃহীত হয়েছে।    
         বক্তা ক্ষিতীশ সিংহ একজন অভিজ্ঞ সাঁতার প্রশিক্ষক, যিনি সুদীর্ঘ পঁয়ত্রিশ বছর ধরে বিখ্যাত জুপিটার ক্লাবে মুখ্য প্রশিক্ষক ছিলেন। জুপিটার থেকে তিনি তাঁর প্রাপ্য সম্মান কখনও পাননি ঠিকই, কিন্তু প্রতিদানে ক্লাবকে অনেকটাই ফিরিয়ে দিয়েছেন। মূলতঃ তাঁরই প্রশিক্ষণে জুপিটারের নামডাক। অবশ্য তাঁর এই কৃতিত্ব ক্লাবের অনেকের ঈর্ষার কারণ ছিল।
      সাঁতার প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে তিনি কখনও কঠোর পরিশ্রমের সঙ্গে আপোস করতেন না, তাই  শিক্ষানবিশ সাঁতারুদের তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিল। এই ক্ষোভকে হাতিয়ার করে জুপিটর কর্তৃপক্ষ ষড়যন্ত্র করে তাঁকে অপসারিত করে হরিচরণবাবুকে চিফ ট্রেনার হিসেবে নিয়োগ করেন ও ক্লাব অন্তঃপ্রাণ ক্ষিতীশকে জুপিটার থেকে সরে যেতে হয়।
       একদিন কোনি নামের একটি গ্রাম্য কিশোরীর মধ্যে ভালো সাঁতারু হওয়ার সম্ভাবনা দেখে ক্ষিতীশ সিংহ তাকে জুপিটারে নিয়ে আসেন। কিন্তু ক্ষিতীশের প্রতি ব্যক্তিগত বিদ্বেষের কারণে ট্রায়াল পাশ করা সত্ত্বেও তাকে সদস্যপদ দেওয়া হয় না। কোনিকে সাঁতার শেখাতে গেলে একটা সুইমিং পুল চাই, এই ভেবে ক্ষিতীশ জুপিটারের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাপেলো ক্লাবের প্রেসিডেন্ট নকুলবাবুর শরণাপন্ন হন। অ্যাপেলো যাতে শত্রুমনোভাবাপন্ন হয়ে কোনিকে ফিরিয়ে না দেয়, তা সুনিশ্চিত করতেই ক্ষিতীশ এই করুণ আর্তি করেছিলেন।  
দ্বিতীয় অংশ
       ক্ষিতীশের এই আচরণের মধ্য দিয়ে আমরা একজন প্রকৃত শিক্ষককে খুঁজে পাই, যিনি নাম, যশ বা অর্থের পরোয়া না করে যোগ্য শিক্ষার্থীর জন্য নিজেকে উজাড় করে দিনে পারেন। সন্তানতুল্য ছাত্রকে যথাযথ জায়গায় পৌঁছে দিতে একজন গুরুর যে দায়িত্ববোধ, দৃঢ়চেনা মনোবৃত্তি থাকা দরকার, ক্ষিতীশের মধ্যে সেই গুণগুলি প্রকাশিত হয়েছিল।   

প্রশ্নঃ ‘এরা তো জুপিটারের শত্রু। আমি কী নেমকহারাম হলাম’ – এই বক্তব্যের মধ্যে বক্তার যে আত্মপীড়ন ধরা পড়েছে, তার বিবরণ দাও। [প্রশ্নমান ৫]
অথবা,
‘বুকের মধ্যে একটা প্রচন্ড মোচড় সে অনুভব করল। চোখ দুটি চিকচিক করে উঠল’ – উদ্দিষ্ট ব্যক্তির এহেন আচরণের কারণ কী ? [প্রশ্নমান ৫]
উত্তরঃ
হাল আমলের বাংলা কিশোর সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় লেখক তথা বিশিষ্ট ক্রীড়া সাংবাদিক মোতি নন্দী প্রণীত কিশোর উপন্যাস ‘কোনি’ থেকে প্রশ্নোদ্ধৃতাংশটি গৃহীত হয়েছে।    
বক্তা ক্ষিতীশ সিংহ একজন অভিজ্ঞ সাঁতার প্রশিক্ষক, যিনি সুদীর্ঘ পঁয়ত্রিশ বছর ধরে বিখ্যাত জুপিটার ক্লাবে মুখ্য প্রশিক্ষক ছিলেন। জুপিটার থেকে তিনি তাঁর প্রাপ্য সম্মান কখনও পাননি ঠিকই, কিন্তু প্রতিদানে ক্লাবকে অনেকটাই ফিরিয়ে দিয়েছেন। মূলতঃ তাঁরই প্রশিক্ষণে জুপিটারের নামডাক। অবশ্য তাঁর এই কৃতিত্ব ক্লাবের অনেকের ঈর্ষার কারণ ছিল।
সাঁতার প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে তিনি কখনও কঠোর পরিশ্রমের সঙ্গে আপোস করতেন না, তাই  শিক্ষানবিশ সাঁতারুদের তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিল। এই ক্ষোভকে হাতিয়ার করে জুপিটর কর্তৃপক্ষ ষড়যন্ত্র করে তাঁকে অপসারিত করে হরিচরণবাবুকে চিফ ট্রেনার হিসেবে নিয়োগ করেন ও ক্লাব অন্তঃপ্রাণ ক্ষিতীশকে জুপিটার থেকে সরে যেতে হয়।
একদিন কোনি নামের একটি গ্রাম্য কিশোরীর মধ্যে ভালো সাঁতারু হওয়ার সম্ভাবনা দেখে ক্ষিতীশ সিংহ তাকে জুপিটারে নিয়ে আসেন। কিন্তু ক্ষিতীশের প্রতি ব্যক্তিগত বিদ্বেষের কারণে ট্রায়াল পাশ করা সত্ত্বেও তাকে সদস্যপদ দেওয়া হয় না। কোনিকে সাঁতার শেখাতে গেলে একটা সুইমিং পুল চাই, এই ভেবে ক্ষিতীশ জুপিটারের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাপেলো ক্লাবের প্রেসিডেন্ট নকুলবাবুর শরণাপন্ন হন।
ক্ষিতীশের মতো একজন প্রবীণ, সফল প্রশিক্ষকের আর্তিকে সম্মান জানিয়ে অ্যাপেলো কর্তৃপক্ষ কোনিকে সদস্যপদ দিতে সম্মত হয়। কিন্ত ক্ষিতীশের নিজের মধ্যে আত্মপীড়নের যন্ত্রণা ধরা পড়ে। যে জুপিটারের জন্য তাঁর সম্মান ও স্বীকৃতি, ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থে তারই প্রতিদ্বন্দ্বীর শরণাপন্ন হওয়ায় তিনি ব্যথিত হয়েছে। পাশাপাশি একজন প্রকৃত গুরুর মতো ছাত্রের উপযুক্ত সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়ার দায়বদ্ধতার দিকটিও ছিল। মানসিকভাবে ক্ষিতীশ যে জুপিটারের সঙ্গে দীর্ঘকালীন বন্ধন ছিন্ন করতে পারবেন না সেটা স্পষ্ট হলেও তাকে অকৃতজ্ঞ বলা যায় না। বরং তিনি তাঁর দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে যথার্থ ছিলেন।  

Previous
Next Post »