জ্ঞানচক্ষু গল্পের প্রশ্নাবলী



মাধ্যমিক ২০২৫ পরীক্ষার প্রস্তুতি

জ্ঞানচক্ষু গল্পের প্রশ্নাবলী


সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নাবলী। [কমবেশী কুড়ি টি শব্দের মধ্যে লেখো]

প্রশ্নঃ ‘ক্রমশ ও কথাটাও ছড়িয়ে পড়ে’ – এখানে কোন্ কথার কথা বলা হয়েছে ?

উত্তরঃ তপন একটি গল্প লিখেছে এবং নতুন মেসোমশাই সেই গল্পটিকেই সংশোধন করে ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় ছাপিয়ে দিয়েছেন – এই কথাটিই তপনের আত্মীয় – পরিজন মহলে ছড়িয়ে পড়ে।  

প্রশ্ন” ‘সূচীপত্রে নাম রয়েছে’ – সেখানে কী লেখা ছিল ?

উত্তরঃ সূচীপত্রে লেখা ছিল – ‘প্রথম দিন’ (গল্প), শ্রী তপন কুমার রায়।

প্রশ্নঃ ‘পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে?’ – কোন্ ঘটনাকে ‘অলৌকিক’ বলা হয়েছে ?

উত্তরঃ তপনের লেখা গল্পটি ‘সন্ধ্যাতারা’র মতো নামজাদা পত্রিকায় প্রকাশ হওয়ার ঘটনাটিকেই এখানে ‘অলৌকিক’ বলা হয়েছে।

প্রশ্নঃ ‘না করতে পারবে না’ – কে, কী না করতে পারবে না ?

উত্তরঃ তপনের নতুন মেসোমশাই একজন বড়ো মাপের লেখক। তাই, তিনি যদি সন্ধাতারা পত্রিকার সম্পাদককে তপনের লেখা গল্পটি ছাপিয়ে দিতে অনুরোধ করেন, তবে সম্পাদক মহাশয় ‘না’ করতে পারবেন না।

প্রশ্নঃ ‘তপন প্রথমটা ভাবে ঠাট্টা’ – কোন্ কথাটা তপন ঠাট্টা ভেবেছিল ?

উত্তরঃ তপনের নতুন মেসোমশাই তার লেখা গল্পের প্রশংসা করে, সেটিকে পত্রিকায় ছাপানোর প্রস্তাব দিলে, তপন এটা প্রথমে ঠাট্টা ভেবেছিল।

প্রশ্নঃ ‘নতুন মেসোমশাই বুঝবে’ – কী বুঝবে ?

উত্তরঃ তপন নিজে একটা গল্প লিখেছে। একজন জহুরী যেমন রত্নের গুণাগুণ সঠিক ভাবে যাচাই করতে পারেন, ঠিক তেমনই লেখক মেসোমশাই তপনের লেখা গল্পের সাহিত্যমান সঠিকভাবে বুঝতে পারবেন বলে তপন মনে করেছিল।  

প্রশ্নঃ তপনের নতুন মেসো কোন্ পেশার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ?

উত্তরঃ তপনের নতুন মেসো ছিলেন একজন অধ্যাপক। তবে অধ্যাপনার পাশাপাশি তিনি ছিলেন একজন লেখন। বিভিন্ন পত্র – পত্রিকায় তাঁর লেখা নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হত।

প্রশ্নঃ ‘এ বিষয়ে সন্দেহ ছিল তপনের’ – কোন্ বিষয়ে তপনের সন্দেহ ছিল ?

উত্তরঃ একজন লেখক যে আর পাঁচটা মানুষের মতো সাধারণ জীবনাচরণের মানুষ, এ বিষয়ে তপনের সন্দেহ ছিল। তার ধারণা ছিল লেখকেরা গ্রহান্তরের মানুষ ও অতিপ্রাকৃতিক ক্ষমতার অধিকারী।

প্রশ্নঃ ‘তপন আর পড়তে পারে না’ – তপনের পড়তে না পারার কারণ কী ?

উত্তরঃ  সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় প্রকাশিত নিজের লেখা গল্পটি পড়তে গিয়ে তপন দেখে নতুন মেসোমশাই সংশোধনের নামে পুরো গল্পটিই বদলে দিয়েছেন। নিজের সৃষ্টি তথা চিন্তনের এহেন অপমৃত্যু দেখে ব্যথিত তপন আর পড়তে পারে না।

প্রশ্নঃ ‘বাবা তোর পেটে পেটে এত’ – কে, কোন্ প্রসঙ্গে একথা বলেছেন ?

উত্তরঃ তপন একটি গল্প লিখেছে এবং নতুন মেসোমশাই সেই গল্পটিকেই সংশোধন করে ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় ছাপিয়ে দিয়েছেন – একথা জেনে তপনের আত্মীয় পরিজনেরা উপরের মন্তব্যটি করেছেন।

প্রশ্নঃ “সারা বাড়িতে শোরগোল পড়ে যায়” – এই শোরগোলের কারণ কী ছিল ?

উত্তরঃ তপন একটি গল্প লিখেছে এবং নতুন মেসোমশাই সেই গল্পটিকেই সংশোধন করে ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় ছাপিয়ে দিয়েছেন – একথা জেনে সাড়া বাড়িতে শোরগোল পড়ে যায়।

প্রশ্নঃ “এমন সময় ঘটল সেই ঘটনা” – কোন ঘটনার কথা বলা হয়েছে ?

উত্তরঃ একদিন তপনের ছোটো মাসি ও নতুন মেসোমশাই সদ্য প্রকাশিত সন্ধ্যাতারা পত্রিকার একটি সংখ্যা হাতে নিয়ে তাদের বাড়ি এলেন। এখানে সেই ঘটনার কথা বলা হয়েছে। ওই পত্রিকায় তপনের লেখা গল্পটি প্রকাশিত হয়েছিল। 




রচনাধর্মী প্রশ্নাবলী। [কমবেশী ১৫০ টি শব্দের মধ্যে লেখো] 

প্রশ্নঃ “কথাটা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল” – তপন কে? কথাটা কি ছিল? তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল কেন?

উত্তরঃ

বাংলা গদ্যসাহিত্য জগতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রত্ন আশাপূর্ণা দেবীর “কুমকুম” নামক গল্পসংকলন থেকে গৃহীত “জ্ঞানচক্ষু” গল্পের প্রধান চরিত্র হলো তপন। তপন একটি অল্পবয়সী কিশোর, যার স্বপ্ন – স্বপ্নভঙ্গের ঘাত প্রতিঘাত ঘিরে “জ্ঞানচক্ষু” গল্পটি আবর্তিত হয়েছে।

গরমের ছুটিতে মামাবাড়িতে এসে তপনের সঙ্গে তার নতুন মেসোমশাইয়ের পরিচয় হয়। নতুন মেসোমশায় অধ্যাপনার পাশাপাশি সাহিত্যচর্চা করেন এবং তিনি একজন লেখক। নতুন মেসোমশাই বই লেখেন এবং তাঁর বই নিয়মিত ছাপা হয় – এ’কথা শুনে তপন অবাক হয়ে যায়।

‘চোখ মার্বেল হয়ে যাওয়া’ – শব্দবন্ধটির আক্ষরিক অর্থ হলো বিস্ময়ে হতচকিত হয়ে যাওয়া। তপনের ধারণা ছিল, লেখকেরা আর পাঁচজন সাধারণ মানুষের মতো নন, তাঁর এক ভিন্নতর জীবনাচরণের মানুষ। লেখকদের অতিমানবত্ব নিয়ে সে মনের মধ্যে নানারকম আজগুবি ধ্যানধারণা পোষণ করত। কিন্তু নতুন মেসোমশাইকে দেখে সে বুঝতে পারে লেখকেরাও তাদের মতো সাধারণ মানুষ, আকাশ থেকে খসে পড়া কোনো মহাজাগতিক জীব নন। লেখক হওয়া সত্ত্বেও তিনি বাবা, ছোটোমামা কিংবা মেজোকাকুর মতো সিগারেট খান, দাড়ি কামান, ঘুমোন কিংবা স্নান করেন; এমনকি থালা থেকে খাবার তুলতে বলেন, স্নানের সময়ে স্নান করেন, খবরের কাগজের সংবাদ নিয়ে তর্ক – বিতর্কে মেতে ওঠেন এবং দেশ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে সিনেমা দেখতে চলে যান। তাঁর এই আটপৌরে জীবনযাপন তপনের মনে বিস্ময়ের উদ্রেগ করে।  

প্রশ্নঃ “তার থেকে দুঃখের কিছু নেই, তার থেকে অপমানের” – দুঃখ আর অপমানের কারণ কী? এই দুঃখ ও অপমান থেকে উদ্দিষ্ট ব্যক্তি কী শিক্ষা লাভ করেছিল?

উত্তরঃ

বাংলা গদ্যসাহিত্য জগতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রত্ন আশাপূর্ণা দেবীর “কুমকুম” নামক গল্পসংকলন থেকে গৃহীত “জ্ঞানচক্ষু” গল্প থেকে প্রশ্নোদ্ধৃত অংশটি নেওয়া হয়েছে।

তপন একজন অল্পবয়সী কিশোর, যার স্বপ্ন – স্বপ্নভঙ্গের ঘাত প্রতিঘাত ঘিরে “জ্ঞানচক্ষু” গল্পটি আবর্তিত হয়েছে। তপনের ধারণা ছিল, লেখকেরা আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতো নন, তাঁরা এক ভিন্নতর জীবনাচরণের মানুষ। কিন্তু ছোটোমাসির বিয়ের পর, লেখক মেসোমশাইয়ের সাধারণ জীবনযাপন দেখে সে প্রাথমিকভাবে বিস্মিত হলেও পরে উপলব্ধি করে, চেষ্টা করলে সেও লেখক হতে পারবে। তাই ছোটোমাসির অনুপ্রেরণায় উৎসাহিত হয়ে সে একটি গল্প লেখে এবং মেসোমশাই তার পরিচিতির প্রভাবে সেই গল্পটি “সন্ধ্যাতারা” নামে একটি পত্রিকায় ছাপিয়েও দেন।

অবশেষে, একদিন পত্রিকাটি যখন তার হাতে এসে পৌঁছয়, সূচিপত্রে নিজের নাম দেখে তার বুকের রক্ত ছলকে ওঠে। তার লেখা গল্প প্রকাশ পেয়েছে এবং তা হাজার হাজার পাঠকের হাতে ঘুরছে ভাবতেই সে উদ্বেল হয়ে ওঠে। কিন্তু তার এই আনন্দ দীর্ঘস্থায়ী হয় না। তপন লেখাটা পড়তে গিয়ে বুঝতে পারে সংশোধন করতে গিয়ে মেসোমশাই তার লেখা গল্পটিই আমূল পালটে দিয়েছেন।

একজন স্রষ্টার স্বীকৃতিই হলো নিজস্বতা। সেই নিজস্বতা না থাকলে সৃষ্টির প্রাণ থাকে না। ‘কারেকশন’ এর বিষয়টি ইতিমধ্যেই পরিজন মহলে উন্মুক্ত হয়েছে, তপন লজ্জিত হয়। কিন্তু সেই দুঃখের মুহূর্তেও অপমানে, লজ্জায় আত্মবিশ্বাসী তপন সংকল্প করে যদি আর কোনোদিন লেখা ছাপানোর হয়, সে নিজে গিয়ে ছাপতে দেবে। না ছাপলে ক্ষতি নেই, অন্ততঃ নিজের সৃষ্টি অবয়বহীন হবে না।  

       

Previous
Next Post »