সমুদ্রস্রোত ও সমুদ্রস্রোত


সমুদ্রস্রোত

ভূমিকা

বায়ুপ্রবাহের মতো সমুদ্রের জলও স্থির নয়। সমুদ্রের জল প্রতিনিয়ত একস্থান থেকে অন্যস্থানে প্রবাহিত হয়। সাগর কিংবা মহাসাগরের জলরাশির এরকম নির্দিষ্ট এবং নিয়মিত প্রবাহকে সমুদ্রস্রোত বলে। 

সমুদ্রস্রোত (Ocean Currents)  

সংজ্ঞা

উপরিভাগের সমতা রক্ষা করা জলের একটি স্বাভাবিক ধর্ম। তাই সমুদ্রপৃষ্ঠের উপরিভাগের জলের সমতা রক্ষার জন্য সমুদ্রের জলরাশি এক স্থান থেকে অন্যস্থানে নির্দিষ্ট দিকে নিয়মিতভাবে প্রবাহিত হয়। সমুদ্রের জলের এই রকম প্রবাহকে সমুদ্রস্রোত বলে।

অন্যভাবে বলা যায়, পৃথিবীর আবর্তন গতি, বায়ুপ্রবাহ, উষ্ণতা, ঘনত্বের তারতম্য, লবণাক্ততা, সমুদ্রের গভীরতার পার্থক্য, তটরেখার প্রকৃতি ইত্যাদি কারণে সমুদ্রের জলরাশি নিয়মিতভাবে, নির্দিষ্ট দিকে একস্থান থেকে অন্যস্থানে নির্দিষ্ট দিকে প্রবাহিত হয় । সমুদ্রজলের এইরকম প্রবাহকে সমুদ্রস্রোত বলে ।

সমুদ্রস্রোতের বৈশিষ্ট্য

[০১] সমুদ্রস্রোত সাধারণত একমুখী হয়।  

[০২] বায়ুপ্রবাহ দ্বারা তাড়িত হয়ে সমুদ্রস্রোতের সৃষ্টি হয় বলে এর গতিবেগ খুবই কম, ঘন্টায় মাত্র 5 - 10 কিমি হয়ে থাকে।  

[০৩] সমুদ্র স্রোত যে দিকে প্রবাহিত হয় সেই দিক অনুসারে বা যে দেশের পাশ দিয়ে চলে যায় তার নামানুসারে সমুদ্রস্রোতের নামকরণ হয়।

[০৪] সমুদ্রের জলরাশি যখন সমুদ্রপৃষ্ঠের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়, তাকে পৃষ্ঠস্রোত বা বহিঃস্রোত এবং যখন সমুদ্রের 400 মিটার গভীর অংশের মধ্য দিয়ে চলাচল করে, তাকে অন্তঃস্রোত বলে।

[০৫] মোট সমুদ্রজলের মাত্র 10 % পৃষ্ঠস্রোতরূপে এবং 90 % অন্তঃস্রোতরূপে প্রবাহিত হয় ।

সমুদ্রতরঙ্গ (Waves)

বায়ুপ্রবাহ, ভূমিকম্প সহ বিভিন্ন কারণে সমুদ্রের উপরিভাগের জলরাশি কোনো দিকে প্রবাহিত না হয়ে একই স্থানে আবদ্ধ থেকে ওঠানামা করলে তাকে সমুদ্রতরঙ্গ বলে । সমুদ্রতরঙ্গের কারণে জলরাশির অনুভূমিক স্থানান্তর হয় না।

সমুদ্রস্রোত ও সমুদ্রতরঙ্গের মধ্যে পার্থক্য  

বিষয় বা ভিত্তি

সমুদ্রতরঙ্গ

সমুদ্রস্রোত

সংজ্ঞা

[০১] সমুদ্র জলপৃষ্ঠের একই স্থানে ছন্দোবদ্ধ উঠানামাকে সমুদ্রতরঙ্গ বলে ।

[০১] সমুদ্রজলের নিয়মিতভাবে নির্দিষ্ট দিকে প্রবাহকে সমুদ্রস্রোত বলে ।

কারণ

[২] প্রবল বায়ুপ্রবাহ, ভূমিকম্প প্রভৃতি সমুদ্রতরঙ্গের সৃষ্টি করে ।      

[২] নিয়ত বায়ুপ্রবাহ, পৃথিবীর আবর্তন গতি প্রভৃতি সমুদ্রস্রোতের উৎপত্তি ঘটায়।  

উপকূলভাবে প্রতিক্রিয়া

[০৩] সমুদ্রতরঙ্গ আড়াআড়িভাবে উপকূলভূমিতে এসে আছড়ে পড়ে । 

[০৩] সমুদ্রস্রোত উপকূলভূমির পাশ দিয়ে উপকূল বরাবর প্রবাহিত হয় ।

জলবায়ুতে প্রভাব

[০৪] সমুদ্রতরঙ্গের দ্বারা উপকূলের জলবায়ু প্রভাবিত হয় না । 

[০৪] সমুদ্রস্রোত উপকূল অঞ্চলের জলবায়ুকে প্রভাবিত করে ।

 

সমুদ্রস্রোতের শ্রেণিবিভাগ

উষ্ণতার তারতম্যে সমুদ্রস্রোত দু-প্রকারের হয় । যথা— (ক) উষ্ণ স্রোত ও (খ) শীতল স্রোত।

(ক) উষ্ণ স্রোত 

সমুদ্রের উষ্ণ জলরাশি যখন নিয়মিতভাবে নির্দিষ্ট দিকে প্রবাহিত হয়, তাকে উষ্ণ স্রোত বলে । এই প্রকারের স্রোত নিরক্ষীয় ও ক্রান্তীয় অঞ্চলের উষ্ণ সমুদ্র থেকে উৎপন্ন হয়ে পৃষ্ঠস্রোতরূপে মেরু অঞ্চলের শীতল সমুদ্রের দিকে প্রবাহিত হয় ।

(খ) শীতল স্রোত 

সমুদ্রের শীতল জলরাশি যখন নিয়মিতভাবে নির্দিষ্ট দিকে স্রোতরূপে প্রবাহিত হয়, তাকে শীতল স্রোত বলে । এই স্রোত মেরু অঞ্চলের শীতল সমুদ্র থেকে উৎপন্ন হয়ে অন্তঃস্রোতরূপে ক্রান্তীয় অঞ্চলের উষ্ণ সমুদ্রের দিকে প্রবাহিত হয় ।

সমুদ্রস্রোত সৃষ্টির কারণ

সমুদ্রতলে উপরিভাগে জলের সমতা রক্ষার জন্য নির্দিষ্ট দিকে নিয়মিতভাবে জলের অনুভূমিক স্থান পরিবর্তনকে সমুদ্রস্রোত বলে। নীচে সমুদ্রস্রোত সৃষ্টির কারণগুলি বর্ণনা করা হলো।

[০১] পৃথিবীর আবর্তন গতি

আহ্নিক গতির কারণে পৃথিবী নিজের অক্ষের ওপর পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে ঘোরে। পৃথিবীর এইরকম আবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সাগর – মহাসাগরের জলরাশিও পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে প্রবাহিত হয়ে সমুদ্রস্রোতের সৃষ্টি করে। ফেরেলের সূত্র অনুসারে এই স্রোত উত্তর গোলার্ধে ডান দিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বাম দিকে বেঁকে প্রবাহিত হয়।

যেমন – উত্তর গোলার্ধের উপসাগরীয় স্রোত ও ক্যানারি স্রোত ঘড়ির কাঁটার দিকে (ডান দিকে) ঘুরে প্রবাহিত হয়। একই ভাবে দক্ষিণ গোলার্ধের ব্রাজিল স্রোত ও পশ্চিমী বায়ুপ্রবাহজনিত স্রোত ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে (বাম দিকে) ঘুরে প্রবাহিত হয়। 

[০২] বায়ুপ্রবাহ

সমুদ্রস্রোতগুলি প্রধান প্রধান বায়ুপ্রবাহের গতি অনুসরণ করে প্রবাহিত হয়। এইসব বায়ুপ্রবাহ এবং সমুদ্রস্রোতের গতিপ্রকৃতি লক্ষ্য করলে দেখা যায়, বায়ুপ্রবাহগুলি নির্দিষ্ট পথে প্রবাহিত হওয়ার সময় সমুদ্রস্রোতগুলিকেও নিজের প্রবাহ পথে টেনে নিয়ে যায়।

যেমন – আয়নবায়ু প্রভাবিত অঞ্চলে সমুদ্রস্রোত পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে এবং প্রত্যয়ন বায়ু প্রভাবিত অঞ্চলে সমুদ্রস্রোত পশ্চিম থেকে প্রবাহিত হয়। অন্যদিকে মৌসুমী বায়ুর গতিপথ অনুসরণ করে ভারত মহাসাগরের স্রোতগুলি প্রভাবিত হয়। ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মৌসুমী বায়ুপ্রবাহের দিক পরিবর্তিত হলে সমুদ্রস্রোতের দিক পরিবর্তিত হয়। 

[০৩] সমুদ্র জলের উষ্ণতার তারতম্য

নিরক্ষীয় অঞ্চলে সূর্যরশ্মি লম্বভাবে কিরণ দেয় বলে সেখানকার সমুদ্রের জল বেশী উত্তপ্ত হয়। আবার মেরু অঞ্চলে সূর্যরশ্মি তির্যকভাবে পড়ে বলে সেখানকার জল তুলনামূলকভাবে শীতল থাকে। এই কারণে উষ্ণতার সমতা বজায় রাখার জন্য তুলনামূলকভাবে উষ্ণ অঞ্চলের জলরাশি শীতল অঞ্চলের দিকে এবং শীতল অঞ্চলের জলরাশি উষ্ণ অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয়। এইভাবে সমুদ্রস্রোত সৃষ্টি হয়।

যেমন - নিরক্ষীয় অঞ্চলের উত্তপ্ত জলরাশি বহিঃস্রোত রূপে মেরু অঞ্চলের দিকে এবং মেরু অঞ্চলের শীতল ও ভারী জল অন্তঃস্রোত রূপে নিরক্ষীয় অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয়।

[০৪] সমুদ্র জলের লবণাক্ততা ও ঘনত্বের তারতম্য

বৃষ্টিপাত, বাষ্পীভবন প্রভৃতি প্রাকৃতিক কারণে সমুদ্রের জলের লবণাক্ততা সব জায়গায় সমান থাকে না। সমুদ্রের জল বেশি লবণাক্ত হলে জলের ঘনত্ব বৃদ্ধি পেয়ে ভারী হয়। অন্যদিকে, জলের লবণাক্ততা হ্রাস পেলে ঘনত্ব হ্রাস পেয়ে জল হালকা হয়ে যায়। তাই বেশি লবণাক্ততা যুক্ত অঞ্চল থেকে সমুদ্রস্রোত অন্তঃস্রোত রূপে কম লবণাক্ততাযুক্ত অঞ্চলের দিকে এবং কম লবণাক্ততাযুক্ত অঞ্চল থেকে বহিঃস্রোত রূপে বেশী লবণাক্ততাযুক্ত অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয়।

যেমন - মেরু অঞ্চলের কম লবণাক্ত ও ভারী জল বহিঃস্রোত রূপে বেশি লবণাক্ত ক্রান্তীয় অঞ্চলের দিকে এবং ক্রান্তীয় অঞ্চলের বেশি লবণাক্ত জল অন্তঃস্রোত রূপে কম লবণাক্ত মেরু অঞ্চলের দিকে প্রবাহিত হয়।

[০৫] বরফের গলন 

মেরু অঞ্চলে সমুদ্রের বরফ গলে গেলে প্রচুর পরিমাণে মিষ্টি জলের যোগান বৃদ্ধি পায়। ফলে সমুদ্রের জলতল স্ফীত হয় ও সমুদ্র জলের লবণাক্ততা হ্রাস পায় এবং এখান থেকে নিম্ন অক্ষাংশের দিকে বহির্মুখী স্রোত সৃষ্টি হয়।

[০৬] উপকূলের আকৃতি

পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে উপকূলভাগের আকৃতির তারতম্য সমুদ্রস্রোতের ওপর প্রভাব বিস্তার করে। সমুদ্রস্রোত প্রবাহিত হওয়ার সময় স্থলভাগে বাঁধাপ্রাপ্ত হলে গতি পরিবর্তন করে নতুন স্রোত উৎপন্ন করে। যেমন – আটলান্টিক মহাসাগরের দক্ষিণ নিরক্ষীয় স্রোত দক্ষিণ আমেরিকার সেন্টরক অন্তরীপে বাঁধাপ্রাপ্ত হয়ে দুটি নতুন স্রোত সৃষ্টি করে। প্রধান শাখাটি দক্ষিণ আমেরিকার উত্তর উপকূল দিয়ে ক্যারিবিয়ান সাগরে প্রবেশ করে এবং পরে মেক্সিকো উপসাগরে পৌঁছে উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোতে পরিণত হয়। দ্বিতীয় শাখাটি পূর্ব উপকূল দিয়ে প্রবাহিত হয়।   

[০৯] ঋতুভেদ 

ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সমুদ্রের জলের ভৌত ও রাসায়নিক বৈশিষ্ট্যের তারতম্য ঘটে। ফলে ঋতু পরিবর্তন সমুদ্রস্রোত সৃষ্টিতে পরোক্ষভাবে প্রভাব বিস্তার করে। যেমন – গ্রীষ্মকালে দক্ষিণ – পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে আরব সাগর থেকে বঙ্গোপসাগর হয়ে সুমাত্রা পর্যন্ত সমুদ্রস্রোত সৃষ্টি হয়। আবার শীতকালে উত্তর – পূর্ব মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে ঠিক এর বিপরীত দিকে সমুদ্রস্রোত সৃষ্টি হয়।

পৃথিবীব্যাপী সমুদ্রস্রোতের প্রভাব

পৃথিবীর সাগর ও মহাসাগরগুলির বিভিন্ন স্থানে মূলত উষ্ণ ও শীতল সমুদ্রস্রোতের প্রভাব বিশেষ ভাবে লক্ষ্য করা যায়। নীচে এদের সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো।

[ক] জলবায়ুর ওপর প্রভাব

জলবায়ুর ওপর সমুদ্রস্রোতের প্রভাব নীচে বর্ণনা করা হলো। 

[০১] উষ্ণ সমুদ্রস্রোত প্রভাবিত অঞ্চলের জলবায়ু উষ্ণ থাকে এবং শীতল সমুদ্রস্রোত প্রভাবিত অঞ্চলের জলবায়ু শীতল হয়।

যেমন – উত্তর আমেরিকার সেন্ট লরেন্স নদী ও তার মোহনা সংলগ্ন অঞ্চল শীতল ল্যাব্রাডার স্রোতের প্রভাবে বছরের প্রায় নয় মাসই বরফাবৃত থাকে। কিন্তু একই অক্ষাংশে অবস্থিত ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের উপকূলীয় অঞ্চল উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোতের প্রভাবে সবসময় বরফমুক্ত থাকে।

লন্ডন এবং নিউইয়র্ক একই অক্ষাংশে অবস্থিত হলেও নিউইয়র্কে শীতকালে কনকনে ঠান্ডা  অনুভূত হয় কারণ নিউইয়র্কের পূর্ব দিক দিয়ে শীতল ল্যাব্রাডার স্রোত প্রবাহিত হয়।   

[০২] উষ্ণ স্রোতের ওপর দিয়ে প্রবাহিত বায়ুতে বেশি পরিমাণ জলীয় বাষ্প থাকে বলে তা স্থলভাগের উপর দিয়ে প্রভাবিত হয়ে বৃষ্টিপাত ঘটায়। অন্যদিকে শীতল স্রোতের উপর দিয়ে প্রবাহিত বায়ু শুষ্ক হয় বলে তা স্থলভাগে বৃষ্টিপাত ঘটায় না, তবে তা তুষারপাত ঘটায়।  

[০৩] উষ্ণ ও শীতল স্রোতের মিলনস্থলে তাপমাত্রার পার্থক্যের জন্য ঘন কুয়াশা এবং ঝড়ের সৃষ্টি হয়। যেমন – নিউফাউন্ডল্যান্ড ও জাপানের পূর্ব উপকূলে কুয়াশা ও ঝড় – বৃষ্টি হয়।  

[খ] মগ্নচড়া সৃষ্টি

        মেরু অঞ্চল থেকে আগত শীতল স্রোতের সঙ্গে অনেকসময় হিমশৈল ভেসে আসে। শীতল স্রোত বাহিত এইসব হিমশৈল উষ্ণ সমুদ্রস্রোতের সংস্পর্শে এসে গলে যায় এবং হিমশৈল বাহিত শিলাখণ্ড, নুড়ি, কাঁকর ও  কাদা বরফমুক্ত হয়ে সমুদ্রের তলদেশে দীর্ঘদিন ধরে সঞ্চিত হয়ে মহাসাগরের বুকে যে বিশাল চরের সৃষ্টি করে তাকে মগ্নচড়া বলে।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, সুমেরু বৃত্ত থেকে আগত হিমশীতল লাব্রাডর স্রোতের সঙ্গে আসা হিমশৈলগুলির মধ্যে ছোটো বড়ো শিলাখন্ড, নুড়ি, কাঁকর ও কাদা মিশ্রিত থাকে । নিউফাউল্যান্ডের কাছে শীতল লাব্রাডর স্রোতের সঙ্গে উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোতের মিলন স্থলে এই স্রোতের সঙ্গে ভেসে আসা হিমশৈলগুলি গলে যায় । এই সব হিমশৈলগুলির মধ্যে থাকা নুড়ি, পাথর, কাঁকড়, কাদা প্রভৃতি থিতিয়ে পড়ে নিউফাউল্যান্ডের পূর্ব-উপকূলে সমুদ্রবক্ষে সঞ্চিত হয়ে ‘গ্রান্ড ব্যাঙ্ক' নামে বিখ্যাত মগ্নচড়ার সৃষ্টি করেছে ।

মগ্নচড়াগুলি মৎস্য চাষের অনুকূল

(১) মগ্নচড়া অঞ্চলগুলি অগভীর হওয়ায় এবং নাতিশীতোষ্ণ মণ্ডলে অবস্থিত হওয়ায় এখানে মাছের বসবাসের উপযোগী অনুকূল তাপমাত্রা পাওয়া যায়।

(২) মগ্নচড়া অঞ্চলগুলির উষ্ণ ও শীতল স্রোতের সংযোগস্থলে প্ল্যাঙ্কটন নামে এক ধরনের আণুবীক্ষণিক জীব প্রচুর পরিমাণে জন্মায় যা মাছের প্রধান খাদ্য । অর্থাৎ মাছের বসবাসের উপযোগী অনুকূল উষ্ণতা ও খাদ্যের অফুরন্ত যোগান থাকাতে মগ্নচড়াগুলিতে প্রচুর মাছ পাওয়া যায় ।

এই জন্যই মগ্নচড়াগুলি মৎস্য চাষের পক্ষে অনুকূল হয়েছে ।

যেমন— নিউফাউন্ডল্যান্ডের পূর্ব উপকূলে অবস্থিত আটলান্টিক মহাসাগরের গ্রান্ড ব্যাঙ্ক নামে মগ্নচড়াটি হল পৃথিবীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মৎস্য চাষ কেন্দ্র ।


Previous
Next Post »