মাইটোসিসের সংজ্ঞাঃ
যে বিশেষ পদ্ধতিতে জীবের কোন দেহকোষ বিভাজিত হয়ে সম-আকৃতিবিশিষ্ট ও সমসংখ্যক ক্রোমােজোমযুক্ত দুটি অপত্য কোষ গঠন করে তাকে মাইটোসিস (Mitosis) বা পরােক্ষ কোষ বিভাজন (Indirect cell division) বলে।
মাইটোসিস বিভাজনের প্রক্রিয়াস্থলঃ
(i) সব রকম উদ্ভিদ ও প্রাণীর দেহকোষে মাইটোসিস ঘটে। (ii) বর্ধনশীল কলাকোষে এই বিভাজন বিশেষভাবে লক্ষণীয়।
(iii) শুক্রাশয়ে স্পার্মাটোগােনিয়া উৎপাদন পর্যন্ত এবং ডিম্বাণুর উগােনিয়াম বা আদি ডিম্বাণু উৎপাদন পর্যন্ত মাইটোসিস ঘটে।
(iv) জাইগােট ভ্রূণে পরিণত না হওয়া পর্যন্ত এই বিভাজন
ঘটে।
মাইটোসিস হয় নাঃ
উদ্ভিদদেহের সীভনালী কোশে ও স্থায়ী কোষে এবং প্রাণিদেহের নার্ভ কোষে, পেশীকোষে, লােহিত কণিকা ইত্যাদি কোষে এই বিভাজন ঘটে না।
মাইটোসিসের আবিষ্কর্তার নামঃ
1878 খ্রীস্টাব্দে বিজ্ঞানী ওয়ালটার ফ্লেমিং প্রথম জীবদেহে মাইটোসিস কোষ বিভাজন প্রক্রিয়া দেখেন।
মাইটোসিসকে সমবিভাজন বলার কারণঃ
মাইটোটিক কোষ বিভাজনে লম্বালম্বিভাবে বিভাজিত হওয়ার ফলে মাতৃকোষের ক্রোমােজোমের সংখ্যা উৎপন্ন অপত্য
কোষের ক্রোমােজোমের সংখ্যা সমান থাকে। এছাড়া অপত্য কোষের ক্রোমােজোমগুলি সমগুণসম্পন্ন হয় এবং DNA ও RNA-এর পরিমাণ বিভাজিত কোষের অনুরূপ হয়। এই সব কারণে মাইটোসিস পদ্ধতি বা মাইটোটিক কোষ বিভাজনকে সদৃশ বিভাজন বা সমবিভাজন বা Equational division বলে।
ক্যারিওকাইনেসিসঃ
কোষের বিভাজনের সময় নিউক্লিয়াসের বিভাজন পদ্ধতিকে ক্যারিওকাইনেসিস (Karyokinesis) বলে। এটি একটি জটিল ও গতিশীল পদ্ধতি। এই বিভাজন প্রােফেজ, মেটাফেজ, অ্যানাফেজ ও টেলােফেজ নামে চারটি দশায় ঘটে।
সাইটোকাইনেসিসঃ কোষের বিভাজনের সময় সাইটোপ্লাজমের বিভাজন , পদ্ধতিকে সাইটোকাইনেসিস (Cytokinesis) বলে। এই প্রক্রিয়ায় কোষ বিভাজনের সময়
নিউক্লিয়াসের বিভাজনের পর হয়।