চূয়াড় বিদ্রোহ (দ্বিতীয় পর্যায়)সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো।

 


মাধ্যমিক প্রস্তুতি 2021, Madhyamik Preparation  2021  মাধ্যমিক ইতিহাস Madhyamik History

 

প্রশ্নঃ চূয়াড় বিদ্রোহ (দ্বিতীয় পর্যায়)সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো। [প্রশ্নমান ৪]

উত্তরঃ

১৭৯৮ – ৯৯ খ্রিষ্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গলমহল এলাকার আদিবাসীরা ইংরেজ ঔপনিবেশিক সরকারের বিরুদ্ধে যে সশস্ত্র প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তুলেছিল, তাই ‘চূয়াড় বিদ্রোহ’ নামে পরিচিত। এই বিদ্রোহে স্থানীয় জমিদারের অধীনে কাজ করা রক্ষী বা পাইকেরাও যোগ দিয়েছিল।

বিদ্রোহের কারণঃ

চূয়াড় বিদ্রোহের মূল কারণ ছিল রাজস্বের অত্যধিক হার ও চূয়াড়দের জমি দখল। দীর্ঘদিন ধরে যারা জমির ভোগদখল করছিল, তাঁদের ওপর অতিরিক্ত করের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয় এবং অকারণে বা বিনা অপরাধে তাঁদের জমি কেড়ে নেওয়া হয়।

অন্যদিকে পাইকেরা বিনা খাজনা বা বেতনের পরিবর্তে জমির সত্ত্ব ভোগ করত। তাদের এই দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেওয়া হয় ও জমি কেড়ে নেওয়া হয়।

আবেদন, নিবেদন করেও যখন এইসব অন্যায় – অবিচারের কোনও প্রতিকার হলো না, তখন তাঁরা সশস্ত্র বিদ্রোহের পথ ধরতে বাধ্য হয়।

নেতৃত্বঃ

এই বিদ্রোহের প্রধান নেতা ছিলেন দুর্জন সিংহ।

বৈশিষ্ট্যঃ

চূয়াড় বিদ্রোহের গতিপ্রকৃতি বিশ্লেষণ করলে এই আন্দোলনের কয়েকটি বৈশিষ্ট্য চোখে পড়ে। যেমন –

·        এই বিদ্রোহের সময় বিদ্রোহীরা সরাসরি সরকারী দপ্তর ও সেনা ছাউনিতে আক্রমণ চালিয়েছিল।

·        এই বিদ্রোহে স্থানীয় জমিদারেরা নেতৃত্ব দিয়েছিল। কৃষক – জমিদার জোট ছিল এই বিদ্রোহের প্রধান বৈশিষ্ট্য।

·        অস্ত্র চালনা ও যুদ্ধ বিদ্যায় পারদর্শী চূয়াড় ও পাইকদের আন্দোলন ছিল হিংসাত্মক জঙ্গি আন্দোলন।

·        এই আন্দোলনে সমাজের সব শ্রেণির মানুষেরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়েছিল।

উপসংহারঃ

১৭৯৮ – ৯৯ খ্রিস্টাব্দের চূয়াড় আন্দোলন অবশ্য শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছিল। একদিকে নির্মম অত্যাচার ও অন্যদিকে চূয়াড় সর্দারদের অর্থ দিয়ে বশীভূত করে ঔপনিবেশিক শাসকেরা এই বিদ্রোহ দমন করেছিল।  

Previous
Next Post »